এক অন্যরকম উত্তরপত্র

Wednesday, 5 April 2017

সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দ

সমার্থক শব্দ বা প্রতিশব্দ



একই বা সমান অর্থের শব্দকে প্রতিশব্দ বা সমার্থক শব্দ বলে। অথবা এমন অনেক শব্দ আছে যাদের অর্থ একই কিন্তু উচ্চারণ ভিন্ন, সেসব শব্দকে সমার্থক শব্দ বলে। অথবা মেয়ে, মেয়েমানুষ, মেয়েছেলে, মাইয়া, কনে, কন্যা, ঝি, বেটি, ঝিউরি, ঝিয়ারি, পুত্রী, দুহিতা, আত্মজা, দুলালী, কুমারী, নন্দিনী, তনয়া, তনুজা, পুত্রিকা, দারিকা ইত্যাদি শব্দগুলো একই অর্থ প্রকাশ করে তাই এগুলো সমার্থক শব্দ। অথবা Synonym is a word which expressingthe same meaning with another /Expressing the same meaning words is called synonym or similar word|
সমার্থক শব্দের প্রয়োজনীয়তা
ভিন্নভিন্ন ভাষার শব্দ থেকে আগত শব্দ, অর্থের দিক দিয়ে এক হলেও অর্থ দ্যোতনার দিক খেয়াল রেখে শব্দ ব্যবহার করা উচিত। যেমন: জল ও পানি একই অর্থবোধক শব্দ কিন্তু জলচ্ছ্বাসকে পানিচ্ছ্বাস লিখলে বাক্যের গুণ নষ্ট হয়। সমার্থক শব্দের ব্যবহার খুব জরুরি। যেমন : দেশি ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে, বক্তৃতা ও বক্তব্য আকর্ষণীয় করতে, একই শব্দের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে, বাক্যকে সহজ, সুন্দর, বলিষ্ঠ, প্রাঞ্জল ও সমৃদ্ধ করতে, বাক্যে শাব্দিক সৌন্দর্য, গুণ, বৈচিত্র্য এবং প্রকাশশৈলীতে অভিনবত্ব আনতে, বাক্যকে অলংকারমণ্ডিত করতে, ছড়াকবিতার ছন্দের মাত্রা ঠিক রাখতে এবং কবিতার মিল দিতে এবং একই শব্দের বার বার প্রয়োগজনিত সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করতে সমার্থক শব্দের ব্যবহার জরুরি।
সমার্থক শব্দের নমুনা
স্বরবর্ণ
অ বর্ণ
১. অবকাশ   — অবসর, ছুটি, ফুরসত, সময়, সুযোগ
২. অপূর্ব    — অদ্ভুত, আজব, আশ্চর্য, তাজ্জব, চমৎকার
৩. অকস্মাৎ — আচমকা, আকস্মিক, সহসা, হঠাৎ
৪. অকাল    — অসময়, অবেলা, অদিন, কুদিন, দুঃসময়
৫. অক্লান্ত    — অদম্য, ক্লান্তি হীন, নিরলস, পরিশ্রমী
৬. অŸম    — অসমর্থ, অপটু, অদক্ষ, অযোগ্য, দুর্বল
৭. অঙ্গীকার — পণ, প্রতিশ্রুতি, প্রতিজ্ঞা, শপথ, সংকল্প
৮. অচেতন — অজ্ঞান, অসাড়, জ্ঞানশূন্য, জ্ঞানহীন, বেহুঁশ
৯. অজ্ঞ    — অশিক্ষিত, অজ্ঞানী, মূর্খ, নির্বোধ, বেকুব
১০. অতিরিক্ত      — অনেক, প্রচুর, পর্যাপ্ত, বেশি, মেলা
১১. অতীত — গতদিন, তৎকাল, পূর্ব, সেকাল, পূর্বকাল
১২. অত্যাচার      — উপদ্রব, নিপীড়ন, নির্যাতন, জুলুম, লাঞ্ছনা
১৩. অদৃশ্য   — অগোচর, অদেখা, অদৃষ্ট, অলক্ষ্য, না দেখা
১৪. অধিবেশন      — সভা, সমিতি, সমাবেশ, মিটিং
১৫. অধ্যয়ন — পাঠ, পঠন, পড়া, পাঠাভ্যাস, লেখাপড়া
১৬. অনন্ত   — অবয়, অসীম, অশেষ, চিরস্থায়ী
১৭. অনুজ্জ্বল — নিস্তেজ, জ্যোতিহীন, ম্লান, বিবর্ণ
১৮. অনুরোধ      — আবেদন, আবদার, আরজি, বায়না
১৯. অপরিচিত     — অজানা, নাজানা, অজ্ঞাত, অচিন
২০. অভাব   — অনটন, দারিদ্র্য, দৈন্য, গরিবি, দুর্দশা
২১. অলস   — কুড়ে, অকর্ম, অকেজো, ঢিলে, আলসে
২২. অল্প    — কম, সামান্য, অপ্রচুর, নগণ্য, কিয়ৎ, ঈষৎ
২৩. অগ্নি    — আগুন, অনল, বহ্নি, দহন, পাবক
২৪. অশ্ব    — ঘোড়া, বাজী, তুরগ, হ্রেষা, টাঙ্গন
২৫. অতিশয় — অতি, অতীব, অতিমাত্রা, অধিক, অত্যন্ত
২৬. অখ্যাতি — নন্দা, কুৎসা, বদনাম, দুর্নাম, অপবাদ
২৭. অন্ধকার — আঁধার, তিমির, তমসা, শর্বর
২৮. অচল   — গতিহীন, অটল, স্থির, নিথর, অপ্রচলিত
২৯. অবস্থা   — দশা, রকম, প্রকার, হাল, হালত
৩০. অনাদর — উপেক্ষা, অবজ্ঞা, অবহেলা, হেলা, অযত্ন
৩১. অপচয় — অপব্যয়, বৃথাব্যয়, ক্ষতি, ক্ষয়, হ্রাস
৩২. অতিথি — মেহমান, কুটুম, আগন্তুক, আমন্ত্রিত
আ বর্ণ
১. আসল    — খাঁটি, মূলধন, মৌলিক, মূল, মৌল
২. আইন    — বিধান, কানুন, ধারা, নিয়ম, নিয়মাবলি
৩. আঁধার   — অন্ধকার, তমসা, তিমির, শর্বর, আলোহীন
৪. আকার   — আকৃতি, চেহারা, আদল, গড়ন, গঠন
৫. আমন্ত্রণ   — আহ্বান, নিমন্ত্রণ, সম্ভাষণ, অভ্যর্থনা
৬. আরম্ভ   — শুরু, সূচনা, ভূমিকা, সূত্রপাত, প্রারম্ভ
৭. আলো    —রশ্মি, কিরণ, দীপ্তি, প্রভা, নুর, জ্যোতি, আভা
৮. আকাশ   — অম্বর, নভ, গগন, আসমান, দ্যুলক
৯. আদেশ   — আজ্ঞা, হুকুম, অনুমতি, অনুশাসন, অনুজ্ঞা
১০. আনন্দ   — হর্ষ, আহ্লাদ, ফুর্তি, খুশি, আমোদ, মজা
১১. আফসোস      — পরিতাপ, দুঃখ, খেদ, অনুতাপ, আক্ষেপ
১২. আধুনিক — সাম্প্রতিক, নব্য, নবীন, বর্তমান, হালের
১৩. আকুল   — ব্যাকুল, কাতর, উৎসুক, কৌতূহলি, অস্থির
১৪. আশ্চর্য   — বিস্ময়, চমক, অবাক
ই /ঈ বর্ণ
১. ইচ্ছা     — সাধ, বাসনা, আকাঙ্ক্ষা, আশা, চাওয়া
২. ইতি     — সমাপ্তি, শেষ, অবসান, সমাপন, ছেদ
৩. ইদানিং   — সম্প্রতি, আজকাল, এখন, অধুনা, বর্তমান
৪. ঈর্ষা     — দ্বেষ, বিদ্বেষ, হিংসা, রেষারেষি, বৈরিতা
৫. ঈশ্বর    — আল্লাহ, খোদা, রব, সৃষ্টিকর্তা, স্রষ্টা, প্রভু
উ/ঊ বর্ণ
১. নমুনা    — দৃষ্টান্ত , নিদর্শন, নজির, নমুনা
২. উজ্জ্বল    — আলোকিত, উদ্ভাসিত, ভাস্বর, ঝলমলে, দীপ্ত
৩. উত্তম    — উৎকৃষ্ট, প্রকৃষ্ট, শ্রেষ্ঠ, সেরা, অতুলনীয়
৪. উচ্ছেদ    — উৎপাটন, উৎখাত, নির্মূল, বিনাশ, স্থানচ্যুতি
৫. উচিত    — যোগ্য, কর্তব্য, উপযুক্ত, ন্যায্য, সমীচীন
৬. উপযুক্ত   — যোগ্য, উপযোগী, সমকক্ষ, সক্ষম
৭. উপকথা   — উপাখ্যান, কাহিনি, গল্প, কেচ্ছা
৮. উপকার — হিতকর, মঙ্গল, সাহায্য, অনুগ্রহ, কল্যাণ
৯. ঊর্বর    — ভাল, ভারসাম্য, অনুকূল, ফলপ্রদ
১০. ঊষা    — প্রভাত, প্রত্যুষ, ভোর, সকাল
এ/ঐ বর্ণ
১. একতা    — ঐক্য, মিলন, একত্ব, অভেদ, অভিন্নতা
২. ঐশ্বর্য    — ধন, সম্পত্তি, বিত্ত, প্রতিপত্তি
৩. ঐক্য    — একতা, একত্ব, মিল, অভিন্ন, সমতা
ব্যঞ্জনবর্ণ
ক-বর্গ (ক/খ/গ/ঘ)
১. কাঁদা    — ক্রন্দন, কান্না, রোদন, কান্নাকাটি, অশ্রুত্যাগ
২. কেনা    — ক্রয়, খরিদ, কেনাকাটা, সওদা
৩. কোন্দল   — বিবাদ, বিরোধ, ঝগড়া, কলহ
৪. কষ্ট     — ক্লেশ, আয়াশ, পরিশ্রম, দুঃখ
৫. কন্যা    — মেয়ে, নন্দিনী, কুমারী, ঝি, বেটি
৬. কথা    — উক্তি, বচন, কথন, বাক্য, বাণী
৭. কলহ    — ঝগড়া, বিরোধ, বিবাদ, দ্বন্দ্ব, কাইয়া
৮. কপাল   — ভাল্, অদৃষ্ট, ভাগ্য, নিয়তি
৯. কেশ     — অলক, চিকুর, কুন্তল, চুল, কবরী
১০. কুল    — বংশ, গোত্র, গোষ্ঠী, জাতি, বর্ণ
১১. কঠিন   — শক্ত, দৃঢ়, কঠোর, কড়া, জটিল, রুক্ষ
১২. কল্যাণ   — মঙ্গল, শুভ, সুখ, কল্যাণযুক্ত, সমৃদ্ধি
১৩. কাটা   — কর্তন করা, খণ্ডন করা, খনন করা
১৪. কারণ   — হেতু, নিমিত্ত, প্রয়োজন, উদ্দেশ্য, মূল
১৫. কৃষক   — চাষি, কৃষিজীবী, কর্ষক
১৬. কূল    — তীর, তট, কিনারা, ধার, পার, পাড়
১৭. খ্যাতি   — যশ, সুনাম, নাম, নামযশ, প্রতিষ্ঠা
১৮. খাদ্য   — খাবার, ভোজ্য, অন্ন, রসদ, খানা
১৯. খবর   — সংবাদ, বার্তা, তত্ত্ব, তথ্য, সমাচার, নিউজ
২০. খাঁটি    — বিশুদ্ধ, আসল, প্রকৃত, যথার্থ, সাচ্চা
২১. খারাপ   — মন্দ, কু, বদ, নিকৃষ্ট, দুষ্ট, নষ্ট, অভদ্র
২২. খুব     — ভীষণ, প্রচণ্ড, প্রচুর, অনেক, অত্যন্ত , অতিশয়
২৩. খোঁজা   — অন্বেষণ, সন্ধান, অন্বেষা, এষণা, তালাশ
২৪. খেচর   — পাখি, পক্ষি, বিহঙ্গ, দ্বিজ, খগ
২৫. গভীর   — অগাধ, প্রগাঢ়, নিবিড়, অতল, গহন
২৬. গরু    — ধেনু, গো, গাভী, পয়স্বিনী
২৭. গৃহ     — ভবন, আলয়, নিলয়, সদন, ঘর, বাড়ি
২৮. ঘরনি   — গৃহিণী, গিন্নী, বউ, স্ত্রী, পত্নী, জায়া, বিবি
চ-বর্গ (চ/ছ/জ/ঝ)
১. চন্দ্র     — চাঁদ, শশী, শশাঙ্ক, ইন্দু, হিমাংশু
২. চক্ষু     — চোখ, লোচন, নয়ন, নেত্র, অক্ষি, আঁখি
৩. চঞ্চল    — অস্থির, চপল, ব্যাকুল, কম্পিত, বিচলিত
৪. চতুর    — চালাক, ধূর্ত,
৫. চিত্র     — ছবি, আলেখ্য, প্রতিমূর্তি, নকশা
৬. চির     — অনন্ত , নিরবধি, নিত্য, অটুট
৭. চিন্তা     — মনন, ভাবা, স্মরণ, ধ্যান, ভাবনা
৮. ছেদ     — যতি, ছেদন, বিরাম, খণ্ড, দাঁড়ি
৯. ছাত্র     — বিদ্যার্থী, শিষ্য, শিক্ষার্থী, শিক্ষানবিশ
১০. জন্ম    — উৎপত্তি, উদ্ভব, সৃষ্টি, ভূমিষ্ঠ, জনম, আবির্ভাব
১১. জলাশয় — পুকুর, সরোবর, দিঘি, জলাধার, জলাভূমি
১২. জাত    — জাতি, গোষ্ঠী, গোত্র, বংশ, প্রকার, কুল
১৩. জ্ঞান   — বোধ, বুদ্ধি, পাণ্ডিত্য, শিক্ষা, চেতনা
১৪. ঝড়    — সাইক্লোন, ঝটিকা, ঝঞ্ঝা, তুফান
১৫. ঝোঁক   — টান, আকর্ষণ, মমতা, মায়া, ভালবাসা
১৬. ঠিক    — সত্য, যথার্থ, নির্ভুল, ন্যায্য, ভাল, উত্তম
১৭. ঠাট্টা    — উপহাস, রসিকতা, বিদ্রুপ, শ্লেষ, মশকরা
১৮. ডগা   — শীর্ষ, শিখর, অগ্রভাগ, আগা, মাথা
১৯. ঢেউ    — ঊর্মি, তরঙ্গ, কলল, হিলল, জোয়ার
২০. ঢাকনা   — আবরণ, আচ্ছাদন, ঢাকা, ছাদ, সরা
২১. ঢের    — প্রচুর, অনেক, বেশি, রাশি, স্তুপ

ত-বর্গ (ত/থ/দ/ধ/ন)
১. তপন    — সূর্য, রবি, ভানু, প্রভাকর, দিনপতি
২. তৃষ্ণা     — পিপাসা, তেষ্টা, পিয়াসা, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা
৩. তুষার    — বরফ, হিম, হিমানী, তুহীন, নীহার
৪. তৈরি    — গঠন, নির্মাণ, গড়া, বানানো, প্রস্তুত
৫. দলিল    — নথি, নথিপত্র, কাগজপত্র, পাট্টা, দস্তাবেজ
৬. দক্ষ     — নিপুণ, পটু, পারদর্শী
৭. দরিদ্র    — দুর্গত, নির্ধন, গরিব, বিত্তহীন, নির্বিত্ত
৮. দরদ    — ব্যথা, বেদনা, মমতা, টান, আকর্ষণ
৯. দয়া     — অনুগ্রহ, করুণা, কৃপা, অনুকম্পা, মায়া
১০. দুঃখ    — কষ্ট, ক্লেশ, যন্ত্রণা, দুখ, ব্যথা, বেদনা
১১. দাস    — ভৃত্য, চাকর, ক্রীতদাস, অনুগত, অধীন
১২. দান    — দেওয়া, অর্পণ, সম্প্রদান, বিতরণ, উৎসর্গ
১৩. দাহ    — দহন, জ্বালা, পোড়া, সৎকার
১৪. দীন    — দরিদ্র, কাতর, অসহায়, দুঃখ, করুণ
১৫. ধন    — বিত্ত, অর্থ, সম্পদ, বিভব, টাকা-পয়সা
১৬. ধর্ম    — রীতি, আচরণ, আইন, সৎকর্ম, পূণ্যকর্ম
১৭. ধ্বংস   — নাশ, বিনাশ, বিলপ, শেষ, ভস্ম, কেয়ামত
১৮. ধবল   — সাদা/শাদা, শ্বেত, শুভ্র, শুল্ক, ধলা, সিতা
১৯. নবীন   — আনকোরা, নতুন, আধুনিক, অধুনা, নব, নয়া
২০. নাম    — খ্যাতি, সুনাম, অভিধা, পরিচয়, মর্যাদা
২১. নিকট   — সন্নিহিত, কাছে, অদূর, অদূরবর্তী
২২. নম্র     — ভদ্র, বিনয়ী, বিনয়াবনত, কোমল, নরম
২৩. নদী    — তটিনী, প্রবাহিনী, তরঙ্গিণী, দরিয়া, গাঙ
২৪. নর     — মানব, মানুষ, মনুষ্য, লোক, জন, পুরুষ
২৫. নারী    — রমণী, মহিলা, স্ত্রী, মেয়ে, ললনা, মানবী
২৬. নিজ    — আপন, স্বীয়, স্বয়ং, নিজস্ব, ব্যক্তিগত
২৭. নিত্য    — সতত, সর্বদা, প্রত্যহ, নিয়মিত, রোজ
২৮. নিদ্রা   — ঘুম, বিশ্রাম, রাতের অবসান, অসাড়
প-বর্গ (প/ফ/ব/ভ/ম)
১. পরিবর্তন — বদল, পাল্টানো, সংস্কার, সংশোধন
২. পানি     — জল, বারি, সলিল, নীর, পয়ঃ
৩. পৃথিবী   — ভুবন, জগৎ, ধরনী, ধরা, বিশ্ব
৪. পাপ     — পাতক, কুলুষ, দুষ্কর্ম, দুষ্কৃতি
৫. পদ্ম     — কমল, উৎপল, পঙ্কজ, কুমুদ, শতদল
৬. পর্বত    — গিরি, পাহাড়, নগ, অচল, ক্ষিতিধর
৭. পিতা    — জনক, জন্মদাতা, বাবা, আব্বা, বাপ
৮. পুত্র     — আত্মজ, দুলাল, তনয়, ছেলে, কুমার, পোলা
৯. পাথর    — পাষাণ, প্রস্তর, শিলা, কাঁকর, কঙ্কর
১০. পুষ্প    — কুসুম, ফুল, রঙ্গনা, প্রসূন
১১. পণ্ডিত   — বিদ্বান, বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ, বিশারদ, মনীষী
১২. পতন   — পড়া, অধোগতি, অবনতি, ধ্বংস, স্থলন
১৩. পতাকা — কেতন, ঝাণ্ডা, ধ্বজা, নিশান
১৪. পত্নী    — বউ, জায়া, সহধর্মিণী, জীবনসাথী, স্ত্রী
১৫. পথ    — রাস্তা, সরণি, সড়ক, নির্গমন, রাহা, দ্বার
১৬. পরম   — শ্রেষ্ঠ, মহৎ, অত্যন্ত , প্রধান, চরম
১৭. পূর্ণ     — পুরা, ভর্তি, সফল, সিদ্ধ, সম্পূর্ণ, সমাপ্ত
১৮. পেলব   — কোমল, মৃদু, লঘু, সুন্দর, নিপুণ, নরম
১৯. পেষণ   — দলন, মর্দন, বাঁটা, চূর্ণন, পেষা
২০. প্রকৃতি   — স্বভাব, চরিত্র, ধর্ম, নিসর্গ
২১. প্রবৃত্তি   — অভিরুচি, স্পৃহা, ব্যাপৃত, চেষ্টা, নিয়োগ
২২. প্রভু    — মনিব, স্বামী, ঈশ্বর, কর্তা, অধিপতি
২৩. পত্র   — পাতা, পল্লব, পত্তর, চিঠি, দ্রব্যাদি
২৪. ফাঁকি   — অবহেলা, বঞ্চনা, প্রতারণা, ঠকামি, ভোগা
২৫. বন্ধুত্ব   — মৈত্রী, সৌহার্দ, সখ্য, মিতালি, দোস্তি
২৬. বায়ু    — হাওয়া, বাতাস, পবন, সমীর, সমীরণ
২৭. বিচিত্র   — বিভিন্ন, রকমারি, রকমফের, বিবিধ, নানান
২৮. বিশৃঙ্খল — ব্যতয়, গোলমাল, গোলযোগ
২৯. বৃহৎ    — বিশাল, প্রকাণ্ড, মস্ত , বিপুল, বড়
৩০. বন    — অরণ্য, অটবী, জঙ্গল, কানন, বনানী, বনভূমি
৩১. বন্ধু    — সখা, মিত্র, সুহৃদ, বান্ধব, স্বজন, প্রিয়জন
৩২. বৃক্ষ    — তরু, মহিরুহ, উদ্ভিদ, গাছপালা
৩৩. বস্ত্র    — বসন, পরিধেয়, কাপড়, পোশাক
৩৪. বসন্ত   — মধুকাল, রাগ, ঋতুরাজ, মধুমাস
৩৫. বিমান   — উড়োজাহাজ, হাওয়াই জাহাজ, আকাশযান
৩৬. বদ    — দুষ্ট, মন্দ, অসাধু, অসৎ, কর্কশ, খারাপ
৩৭. বাদ    — বাতিল, কথন, ভাষণ, উক্তি, বিয়োগ, ত্যাগ
৩৮. বর    — বরণীয়, পতি, স্বামী, জামাই
৩৯. বহু    — যথেষ্ট, অধিক, অনেক, প্রচুর, বেশি
৪০. বড়    — জ্যেষ্ঠ, ধনী, শ্রেষ্ঠ, শীর্ষ, উচ্চ, মহৎ
৪১. বন্ধ    — বাঁধা, আবদ্ধ, রুদ্ধ, যুক্ত, ন্যস্ত , বিন্যস্ত
৪২. বন্যা    — প্লাবন, বান, জলচ্ছ্বাস, জোয়ার, কোটাল
৪৩. বশ    — অধীন, আয়ত্ত, অধীনতা, বশবর্তিতা
৪৪. বসা    — উপবেশন, স্থাপন, সক্রিয় হওয়া
৪৫. বাস্তু    — বাসস্থান, বাসগৃহ, বাসভূমি, আবাস
৪৬. বিদ্যুৎ   — তড়িৎ, বিজলি, শম্পা, চপলা, চঞ্চলা
৪৭. বিফল   — ফলহীন, অচল, নিষ্ফল, অসমর্থ, ব্যর্থ
৪৮. বিচক্ষণ — বহুদর্শী, দূরদর্শী, অভিজ্ঞ, কর্মদক্ষ
৪৯. বিচার   — বিবেচনা, যুক্তিপ্রয়োগ, তর্ক, মীমাংসা
৫০. বিধি    — নিয়ম, বিধান, আইন, পদ্ধতি, উপায়
৫১. বিয়োগ — বিচ্ছেদ, বিরহ, মৃত্যু, অভাব
৫২. বিরক্ত   — বিমুখ, বিপ, অপ্রসন্ন, বিদ্বিষ্ট, ক্ষুব্ধ
৫৩. বিবাহ   — বিয়ে, পরিণয়, পাণিগ্রহণ, উদ্বাহ, শাদি
৫৪. ভয়    — শঙ্কা, ত্রাস, ভীতি, ডর
৫৫. ভাই    — ভ্রাতা, সহোদর, ভাইয়া, ভায়া
৫৬. ভাগ্য   — বিধি, কপাল, নসিব, তকদির, নিয়তি
৫৭. ভুল    — ভ্রম, ভ্রান্তি , ত্রুটি, প্রমাদ, গলদ, দোষ
৫৮. ভ্রমর   — ভোমরা, মৌমাছি, মধুকর, মধুপ, অলি
৫৯. ভগ্ন    — ভাঙা, খণ্ডিত, চূর্ণিত, দুমড়ানো, কুঞ্চিত
৬০. ভজন   — স্তুতি, আরাধনা, সেবা, প্রশংসা
৬১. ভয়ানক — ভয়ঙ্কর, ভয়াবহ, খুব, ভীষণ
৬২. ভর    — অবলম্বন, নির্ভর, সহযোগিতা, ভার
৬৩. ভাব   — সত্তা, অস্তিত্ব, স্থিতি হওয়া
৬৪. মাতা   — জননী, মা, প্রসূতি, গর্ভধারিণী, জন্মধাত্রী
৬৫. মৃত্যু    — মরণ, নিধন, ইন্তেকাল, মহাপ্রস্থান
অন্যান্য বর্ণ
১. রাজা    — রাজ্যপাল, নৃপতি, ভূপতি, মহীপাল, সম্রাট
২. রানি     — রাজ্ঞী, মহিষী, সম্রাজ্ঞী, রাজমহিষী, বেগম
৩. ঋষি     — তপস্বী, মুনি, যোগী, সাধুপুরুষ
৪. ঋদ্ধ     — সমৃদ্ধ, উন্নত, পুষ্ট, কল্যাণকর
৫. ঋতু     — আর্তব, কাল, মৌসুম, মরশুম
৬. শিক্ষক   — গুরু, ওস্তাদ, মাষ্টার, টিচার
৭. হস্তি     — হাতি, করী, গজ, দ্বিপ, মাতঙ্গ
৮. হরিণ    — মৃগ, কুরঙ্গ, সাঙ্গ, সৃনয়ন

Tuesday, 4 April 2017

প্রবাদ-প্রবচন

প্রবাদ-প্রবচন



লোকসাহিত্যের বিভিন্ন শাখা রয়েছে। তার মধ্যে প্রবাদ সমকালকে সবচে বেশি স্পর্শ করে আছে। আধুনিক যুগে সব ধরনের রচনায় প্রবাদ ব্যবহৃত হয়। কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, নাটক, সংবাদপত্র, বিজ্ঞাপন, বক্তৃতা, দৈনন্দিন কথাবার্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রবাদের ব্যবহার অহরহ লক্ষ্য করা যায়। প্রবাদ লোকসাহিত্য ধারায় ক্ষুদ্রতম রচনা। ‘গরু মেরে জুতা দান’, ‘ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান বানে’, ‘অতি চালাকের গলায় দড়ি/অতি বোকার গায়ে বেড়ি’ ইত্যাদি প্রবাদে দুই শব্দের বাক্য থেকে দুই চরণের বাক্য আছে। প্রবাদ যতোই ক্ষুদ্র হোক না কেন তা পূর্ণাঙ্গ ভাব ও অর্থবহ। প্রবাদ মানুষের সামাজিক বাস্তব অভিজ্ঞতাপ্রসূত এবং মূলত বুদ্ধিপ্রধান রচনা। একটি প্রবাদ মানুষের ব্যবহারিক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা বা উপলব্ধি থেকে জন্ম নেয়। ‘অতি সন্যাসীতে গাজন নষ্ট’, ‘চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে’, ‘জোর যার মুলুক তার’, ‘লাগে টাকা, দিবে গৌরীসেন’, ‘কোম্পানির মাল দরিয়া মে ঢাল’, ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’ ইত্যাদি প্রবাদের আটসাঁট গড়ন, এতে বাড়তি কোন বিষয় নাই। স্বল্প কথায় খুব বেশি অর্থ বহনক্ষমতা। প্রবাদের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হলো বিশেষ উক্তি বা কথন। যে উক্তি লোক পরস্পরায় জনশ্রুতিমূলকভাবে চলে আসছে তাই প্রবাদ। প্রবাদ ভাঙে না বা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। ‘ধান ভানতে শিবের গীত’ অথবা ধান ভানতে মহীপালের গীত’ প্রবাদটির মৌলিক কাঠামোর পরিবর্তন হয়নি। ‘শিব’ কৃষিদেবতা, ‘মহীপাল’ বাংলার পাল বংশের একজন শক্তিশালীরাজা। প্রবাদের জন্মতিহাসের দিক থেকে শিব আগে। অতএব এটি মৌলিক প্রবাদ, শিবের স্থলে মহীপাল পরে যুক্ত হয়েছে। সাধারণ কাজে বড় বিষয়ের অবতারণা করলেই প্রবাদ বলা হয়। ‘কোম্পানির মাল দরিয়া মে ঢাল’ অথবা ‘সরকারের মাল দরিয়া মে ঢাল’ প্রবাদে কোম্পানির সরকার শব্দের স্থানবদল হয়েছে। ‘সরকার’ ও ‘দরিয়া’ ফার্সি শব্দ, ‘কোম্পানি’ ইংরেজি শব্দ। ফার্সি ভাষার সঙ্গে বাংলার মানুষের আগে পরিচয় হয়েছে, ইংরেজি ভাষার সঙ্গে পরে পরিচয় হয়েছে। সুতরাং সরকারযুক্ত প্রবাদটি মৌলিক।
জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তৈরি জনপ্রিয় অর্থবহ উক্তিকে প্রবাদ বলে। ভাষা বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয় বলে প্রবাদ ভাষাকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলে। প্রবাদ বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। Proverb যেমন ইংরেজি ভাষার সম্পদ তেমনি প্রবাদ বাংলা ভাষার সম্পদ। দার্শনিক বেকন প্রবাদের মধ্যে একটি জাতির মেধা, বুদ্ধির চৈতন্যের প্রতিফলন দেখেছেন। তিনি বলেন, the genius, wit and spirit of a nation are discovered by their proverbs। আর্চার টেলর প্রবাদ বিষয়ে সংজ্ঞার্থে বলেছেন- A proverb is aterse did active statement that is currentintradition or as an epigram says, the wisdom of many and the wit of one অর্থাৎ তাঁর মতে, প্রবাদ হলো ঐতিহ্যাশ্রিত নীতিশিক্ষামূলক নিটোল উক্তি। তিনি আরও বলেন, প্রবাদে একের বুদ্ধির বহুর জ্ঞান নিহিত আছে। ডবলিউ সি হ্যাজলিট প্রবাদকে লোকমনে ব্যাপ্ত সত্যের প্রকাশ বলেছেন অলংকার ছন্দের ভাষায় তা ব্যক্ত করা হয়। উপরের সংজ্ঞা থেকে প্রবাদ সম্পর্কে কতকগুলো তথ্য পাওয়া যায়। যেমন: প্রবাদে জাতির ‘দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, ‘পরিণত বুদ্ধি’, নীতিবাক্য’, ‘নৈতিকতার অলিখিত বিধি এবং ‘লোকমনে প্রভাহিত সত্যকথন’ প্রকাশিত হয়। প্রবাদের অবয়ব হলো ‘একটি সংক্ষিপ্ত বাক্য’, ‘স্ফটিকীকৃতরূপ’ ও ‘শব্দগুচ্ছের সমন্বয়’। প্রবাদ ঐতিহ্যাশ্রিত। প্রবাদ উপমা, বক্রোক্তি, বিরোধাভাস, অতিশয়োক্তি অলংকারের ভাষায় প্রকাশিত হয়।

প্রবাদের অর্থগত প্রকরণ
বিভিন্নভাবে প্রবাদের প্রকরণ হতে পারে। যেমন : 
১. নীতিকথামূলক      : ধর্মের কল বাতাসে নড়ে, সত্যের জয় হয়।
২. ইতিহাসমূলক কথা    : ধান ভানতে শীবের গীত।
৩. সাধারণ অভিজ্ঞতামূলক   : দশের লাঠি একের বোঝা। চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে।
৪. চরিত্রমূলক         : গায়ে মানে না আপনি মোড়ল।
৫. সমাজমূলক        : মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত। মরলে শহিদ বাঁচলে গাজি।
৬. কাহিনিমূলক       : অতি লোভে তাঁতি নষ্ট।
৭. সমার্থকমূলক       : কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনি।
৮. পরস্পর বিরোধিমূলক : দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ। অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট।
৯. ক্রিয়াহীন         : আপন ভাল তো জগৎ ভাল।

প্রবাদের বাক্যগত গঠন
১. পূর্ণবাক্য : মরা হাতিও লাখ টাকা। এক হাতে তালি বাজে না। যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়।
২. খণ্ডবাক্য : ঘরের শত্রু বিভীষণ। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত ।
৩. বহুখণ্ডবাক্য : কাজের বেলায় কাজি, কাজ ফুরালে পাজি। অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর।

বাংলা ভাষায় বহুল প্রচলিত প্রবাদ (প্রবাদ-প্রবচন, অর্থ ও বাক্যরচনা)
১. অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ (ভক্তি শ্রদ্ধার মাত্রা বেশি হলে সন্দেহ জাগে যে এর পেছনে হয়তো স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্য আছে) চেয়ারম্যানের সাগরেদদের দেখলেই বোঝা যায় তাদের মতলব খারাপ-কেনা জানে অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।
২. অনভ্যাসে বিদ্যা হ্রাস পায় (চর্চাহীন থাকলে অর্জিত জ্ঞানও হ্রাস পায়) কতদিন কবিতা পড়া নাই, আমাকে অনুরোধ কর না জানইত অনভ্যাসে বিদ্যা হ্রাস পায়।
৩. অতি দর্পে হত লংকা (অহংকারের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে পতন অবশ্যম্ভাবী) ধনের গৌরবে তোমার যেন মাটিতে পা পড়ে না, এ কথাতো জানো অতি দর্পে হত লঙ্কা।
৪. অতি বাড় বেড়ো নাকো ঝড়ে পড়ে যাবে (অহংকার বেশি করতে গেলে পতন অবশ্যম্ভাবী) মামা এসপি হয়েছে বলেই অতি বাড় বেড়ো না একদিন অপরাধী ঠিকই ঝড়ে পড়বে।
৫. আঙুল ফুলে কলা গাছ (সামান্য অবস্থা থেকে হঠাৎ বড়লোক হওয়া) রহমত সরকারি চাকরি পেয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছিল, দুর্নীতির দায়ে এখন তার জায়গায় শ্রী ঘরে।
৬. আঠার মাসে বছর (দীর্ঘসূত্রিতা/কুঁড়ে স্বভাব) কাজটি আমার তাড়াতাড়ি দরকার, তোমাকে দিয়ে হবে না, তোমার তো আঠার মাসে বছর।
৭. আদ্যিকালের বদ্যি বুড়ো (খুব প্রাচীন ব্যক্তি) অল্প বয়সেই বলছ-আদ্যিকালের বদ্যি বুড়ো।
৮. আপন ভালো তো জগৎ ভালো (নিজে ভাল হলে সব ভালো) অচেনা জায়গা বলে ভয় পাবার কিছু নাই, মনে রেখ আপন ভালো তো জগৎ ভালো।
৯. আদার ব্যাপারির জাহাজের খবর (সামান্য কাজের লোক) সামান্য কেরানি হয়ে অফিসের নীতি নির্ধারণী বিষয় নিয়ে মাথা খাটানো আর আদার ব্যাপারির জাহাজের খবর নেয়া সমান কথা।
১০. আমড়া কাঠের ঢেঁকি (অকর্মণ্য) তুমি আস্ত একটা আমড়া কাঠের ঢেঁকি, জগৎ সংসারে কিছুই তোমাকে দিয়ে হবে না।
১১. আপন চেয়ে পর ভালো (অপ্রত্যাশিত কারো সাহায্য লাভ) এই বিপদে স্বজনদের কারো সাহায্যই পাইনি, তুমিই আমাকে উদ্ধার করেছ এখন দেখছি আপন চেয়ে পর ভালো।
১২. আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া (দুর্লভবস্তু নাগালের মধ্যে পাওয়া) এই দুর্মূল্যের বাজারে টাকা ধার পাওয়া আর আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া সমান কথা।
১৩. আকাশ থেকে পড়া (অপ্রত্যাশিত) বিশ্বস্থ কর্মচারীর দুর্নীতির কথা জানতে পেরে বড় সাহেব আকাশ থেকে পড়লেন।
১৪. আপনার নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ (নিজের ক্ষতি করেও অপরের অনিষ্ট করা) বাংলাদেশের রাজনীতিতে শুধু বিরোধীতার স্বার্থে বিরোধীতা এখানে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার লোকের অভাব নাই।
১৫. আকাশ পাতাল প্রভেদ (প্রচুর ব্যবধান) চৌধুরী বংশ ও সর্দ্দার বংশের মধ্যে আকাশ পাতাল প্রভেদ, ওদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে ওঠা সহজ নয়।
১৬. আপন চরকায় তেল দাও (কেউ অনধিকার চর্চা করলে, তাকে একথা বলে সতর্ক করা হয়) বন্ধুর পারিবারিক সমস্যায় নাক না গলিয়ে নিজের চরকায় তেল দাও।
১৭. ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় (উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ইচ্ছাই যথেষ্ট) পরিবেশ যতই প্রতিকূল হোক না কেন কাজে নেমে পড়, জানতো ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়।
১৮. ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় (কারো সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে বিনিময়ে দুর্ব্যবহার পেতে হয়) অন্যকে অপমান করার আগে স্মরণ রেখ ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়।
১৯. ইল্লত যায় না ধুলে, স্বভাব যায় না মলে (যার যা স্বভাব তা সে কিছুতেই ছাড়তে পারে না) সন্ত্রাসীদের বারবার উপদেশ দিয়েও সুপথে আনা গেলো না আসলে ইল্লত যায় না ধুলে, স্বভাব যায় না মলে।
উ/ঊ
২০. উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে (একের দোষ অন্যের ঘাড়ে দেওয়া) যুদ্ধাপরাধীরা যতই উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে চাকনা কেন, জাতি এবার বিচার চায়।
২১. উঠন্তি মূল পত্তনেই চেনা যায় (ভবিষ্যতের আভাস শুরুতেই মেলে) তুমি জীবনে অনেক বড় হতে পারবে, উঠন্তি মূল পত্তনেই চেনা যায়।
২২. উড়ে এসে জুড়ে বসা (যার ন্যায়সঙ্গত কোন দাবি) ভূমিহীনদের বঞ্চিত করে চৌধুরী সাহেব খাস জমিতে উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন।
২৩. উন বর্ষায় দুনো শীত (অল্প কাজে অধিক লাভ) শেয়ার বাজারে লগ্নি করে মানুষ হঠাৎ বড়লক হবার স্বপ্ন দেখছে, রখানে উন বর্ষায় দুনো শীত।
২৪. উনা ভাতে দুনা বল (অল্প আহার স্বাস্থ্যসম্মত) স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হলে জানতে উনা ভাতে দুনা বল।
২৫. এক ঢিলে দুই পাখি মারা (একসঙ্গে দুই কাজ সমাধা করা) বহুদিনের শত্রুতা ভুলে রহিম জোয়ার্দ্দার সর্দ্দার বংশে ছেলের বিয়ে দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারার পরিকল্পনা করেছেন।
২৬. এক মাঘে শীত যায় না (বিপদ একবার এসেই শেষ হয় না) আমার এ বিপদে আমাকে একলা ফেলে চলে যেও না, মনে রেখ এক মাঘে শীত যায় না।
২৭. এক হাতে তালি বাজে না (সব দ্বন্দ্বেই দুপক্ষের দায়িত্ব থাকে) নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে তোমার কোন লাভ নাই আমরা জানি এক হাতে কখনও তালি বাজে না।
২৮. ওস্তাদের মার শেষরাতে (যথার্থ ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত সফল হয়) জাহিদ শেষ পর্যন্ত নাটক প্রদর্শনীতে আমাদের গ্রুপের মান রক্ষা করল, আসলে ওস্তাদের মার শেষরাতে একথা মিথ্যা না।
২৯. কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না (সাফল্যের পেছনে সাধনার প্রয়োজন) ব্যারিস্টার হবে অথচ পরিশ্রম করবে না, তা কি হয়? কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে?
৩০. কয়লা ধুলে ময়লা যায় না (অসৎ লোক সৎ উপদেশেও কাজ হয় না) কাল টাকা সাদা করলেই কি দুর্নীতিবাজ ভালো হয়, আসলে কয়লা ধুলে ময়লা যায় না।
৩১. কত ধানে কত চাল (পরিণাম) কত ধানে কত চাল একথা বুঝে তার পরে কাজে হাত দাও।
৩২. কথায় চিড়ে ভেজে না (বাকচাতুরিতে সব কাজ হাসিল হয় না) সরকারি দপ্তরে এখন আর কথায় চিড়া ভেজে না কাজের অনুমোদন পেতে নগদ অর্থের প্রয়োজন হয়।
৩৩. কারো পোষমাস কারা সর্বনাশ (কারো সুদিন কারো দুর্দিন) চিরদিন কারো কি সমান যায়, কারো পোষমাস কারো সর্বনাশ এতো প্রকৃতিরই নিয়ম।
৩৪. কাঙালের কথা বাসি হলে ফলে (নগণ্য লোকের কথাও শেষ পর্যন্ত ফলতে পারে) আগেই বলছি ওদের মতো দুষ্ট ছেলের সঙ্গে মেলামেশা করো না-মনে রেখ কাঙালের কথা বাসি হলে ফলে।
৩৫. খাল কেটে কুমির আনা (নিজের জন্য বিপদ সৃষ্টি করা) বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ মতো চলা আর খাল কেটে কুমির নিয়ে আসা সমান কথা।
৩৬. খোদার মার দুনিয়ার বার (প্রাকৃতিক কারণে যা ঘটে তা রোধ করার শক্তি মানুষের নাই) খোদার মার দুনিয়ার বার তাই ভেবে বসে থাকলে তো আর জগৎ সংসার চলবে না মানুষকে কাজ করে যেতেই হবে।
৩৭. খুঁটির জোরে ভেড়া নাচে (শক্তিমানের সাহায্যে শক্তি বৃদ্ধি হয়) শুধু ছাত্রদের দোষারোপ করলে চলবে না, মুরুব্বিরাজনীতিবিদদের আস্কারাতেই নেতাকর্মীরা শিক্ষাঙ্গণে সন্ত্রাস করতে সাহস পায়, খুঁটির জোরে ভেড়া নাচে।
৩৮. খালিকলসি বেশি শব্দ করে (অন্তঃসারশূন্য) টেলিভিশনের টক শোগুলো দেখলে মনে হয় খালিকলসি শব্দ করে বেশি।
৩৯. খিদে পেলে বাঘেও ধান খায় (প্রয়োজনে মানুষ যেকোনো কাজ করতে বাধ্য হয়)রহিমকে শেষ পর্যন্ত আতাহার সাহেবের কাছেই ধর্না দিতে হলো, খিদে পেলে বাঘেও যে ধান খায়।
৪০. গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না (নিজের দেশে গুণীর কদর নাই) আমাদের দেশে গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না বলেই যোগ্য মানুষ গড়ে ওঠে না।
৪১. গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল (গ্রামবাসী না মানলেও নিজেকে কর্তা বলে জাহির করা) কাজ কাম করার নাম নাই গায়ে মানে না আপনি মোড়লের মত দেশ উদ্ধার করতে নেমেছ, তাই না?
৪২. গরু মেরে জুতা দান (নিদারুণ অপমান করে পরে সামান্য উপায়ে তুষ্ট করার চেষ্টা) বড় সাহেবের কাছে কান কথা লাগিয়ে এখন এসেছ সান্তনা দিতে? তোমার গরু মেরে জুতা দানে আমার কোন প্রয়োজন নাই।
৪৩. গাছে তুলে মই কেড়ে নেয়া (আশা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করা) যৌথ কারবারে টাকা লগ্নি করবে বলেই ব্যবসা শুরু করেছিলাম, গাছে তুলে এখন তুমি মই কেড়ে নিচ্ছ কেন?
৪৪. গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল (ভবিষ্যতের অতিরিক্ত আশা) গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল লাগিয়ে সময় নষ্ট না করে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ভালভাবে প্রস্তুতি নাও।
৪৫. গোদের ওপর বিষফোঁড়া (ঝামেলার ওপর আরও ঝামেলা) কলেজে পরীক্ষা অন্যদিকে বউয়ের অসুখ আশরাফ সাহেবের গোদের উপর বিষফোঁড়া ওঠার অবস্থা।
৪৬. ঘুঘু দেখেছ ফাঁদ দেখনি (মন্দ লোককে জব্দ করা) ভেবেছ মোটা অংকের লাভের লোভ দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে পালাবে, ঘুঘু দেখছ ঘুঘুর ফাঁদ দেখনি, দেখাচ্ছি মজা।
৪৭. ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায় (বিপদের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে অল্পতেই শঙ্কিত হওয়া স্বাভাবিক) একবার প্রতারণার শিকার হয়ে লুৎফর আর এনজিওর কথা শুনতে পারে না, ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়।
৪৮. ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো (বিনা লাভে কোন কর্ম করা) আমাদের সমাজে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো লোকের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
৪৯. ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া (গুরুজনদের অগ্রাহ্য করে অর্বাচীনদের মাতব্বরি) বিয়ে করতে হলে ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়া বাদ দিয়ে তোমার বাবা মাকেই সঙ্গে নিয়ে এসো।
৫০. ঘোমটার নিচে খেমটা নাচ (বাইরে সাধু ভিতরে খল) আদর্শের কথা ভুলে সমাজে এখন অনেকেই ঘোমটার নিচে খেমটা নাচ নাচতে শুরু করেছে।
৫১. চকচক করলেই সোনা হয় না (বাহ্যিক সৌন্দর্যই প্রকৃত পরিচয় নয়) জিন্স সার্ট পরলেই প্রগতিশীল হয় না, মনের খবর নাও, মনে রেখ চকচক করলেই সোনা হয় না।
৫২. চোরে চোরে মাসতুত ভাই (প্রতারকরা পরস্পরকে সমর্থন করে) উপর উপর বিরোধ দেখালে হবে কী আসলে ওরা সবাই চোরে চোরে মাসতুত ভাই।
৫৩. চেনা বামুনের পৈতা লাগে না (যার যোগ্যতা জানা আছে, তার সম্পর্কে সুপারিশ লাগে না) চেনা বামুনের পৈতা লাগে না, তুমি এসেই কাজে যোগ দাও।
৫৪. চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনি (অসৎ ব্যক্তি ভাল উপদেশ গ্রহণ করে না) দুর্নীতিবাজদের কাল টাকা সাদা করতে বলে লাভ কী, চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনি এতো জানা কথা।
৫৫. ছেলের হাতের মোয়া (সহজলভ্য বস্তু) শিক্ষানীতি ছেলের হাতের মোয়া নয়, তার জন্য জাতীয় আদর্শ নির্ধারণ করার প্রয়োজন হয়।
৫৬. ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি (দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির জন্য ব্যাকুলতা) ভর্তি বাণিজ্যের এ যুগে নেতা-পাতিনেতাদের চাপে আশরাফ সাহেব একেবারে কাহিল-তাঁর এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা।
৫৭. ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা (অসম্ভব কল্পনা করা) সরকারি চাকরি করে ঢাকা শহরে বাড়ি বানানোর চিন্তা করা আর ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা সমান কথা।
৫৮. জলে কুমির ডাঙায় বাঘ (উভয় দিকে বিপদ) একদিকে সন্ত্রাসীদের হুমকি অন্যদিকে পুলিশের নজরদারি আমারতো জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ অবস্থা।
৫৯. জাতে মাতাল তালে ঠিক (বেহিসেবির মতো দেখালেও প্রকৃতপক্ষে হিসেবি) ছন্নছাড়ার মত জীবন যাপন করলেও রশিদ ঢাকায় ফ্ল্যাট এবং ব্যাংকে মোটা অংকের সঞ্চয় করে রেখেছে। আসলে সে জাতে মাতাল তালে ঠিক।
৬০. জলে বাস করে কুমিরের সঙ্গে বিবাদ (প্রভাবশালী ব্যক্তির অধীনে থেকে তার সঙ্গে বিবাদ) প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে বসের সঙ্গে পোদ্দারি করা আর জলে বাস করে কুমিরের সঙ্গে বিবাদ করা সমান কথা।
৬১. জ্বলন্ত আগুনে ঘি দেওয়া (উত্তেজনা বৃদ্ধি করা) চাকরি হারিয়ে যারা অনশন করছে তাদের উপর লাঠিচার্য করে পুলিশ জ্বলন্ত আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে।
৬২. ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি ফলে (কাজ আপনা আপনি হয়ে যায়, চালাক লোক বাহাদুরি নেয়) কার সুপারিশে চাকরি হলো বোঝা দায়, আসলে ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি ফলে।
৬৩. ঝিকে মেরে বউকে শেখানো (ইশারায় তিরস্কার) ঝিকে মেরে বউকে শেখানোর জন্যই প্রধানমন্ত্রী ছাত্রনেতাদের তিরস্কার করলেন, আসলে তাঁর লক্ষ্যই ছিল মন্ত্রীরা।
৬৪. ঝোপ বুঝে কোপ মারা (সুযোগের সদ্ব্যবহার করা) সবাই তোমার মত অথর্ব নয়, ঝোপ বুঝে কোপ মারার লোকের এখন অভাব নাই।

৬৫. টাকায় বাঘের দুধ মেলে (অর্থের জোরে সবকিছু করা যায়) টাকায় এখন বাঘের দুধ মেলে আর তুমি কিনা অফিস ডেকোরেশনের চিন্তায় দিশেহারা হতে বসেছ।
৬৬. ঠেলার নাম বাবাজি (চাপে পড়ে কাবু হওয়া) যত ক্ষমতাধারী স্বৈরাচারীই হোক না কেন জনগণের দাবির কাছে নতি স্বীকার করতেই হবে। যান না যে ঠেলার নাম বাবাজি।
৬৭. ডানায় ভর দিয়ে চলা (শূন্যলোকে ভাসা) পরীক্ষা শেষ করেতো ডানায় ভর দিয়ে চলছ, ভর্তি কর্ম অনুশীলন নিতে হবে সে কথা কী ভুলে গেছ?
৬৮. ডুবে ডুবে জল খাওয়া (গোপনে কাজ করা) ডুবে ডুবে জল খেয়ে যে আমার বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র করছে একথাতো ঘুর্ণাক্ষরেও জানতে পারেনি।
৬৯. ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে (সবখানে একই কাজ করা) ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে মাস্টারি করি বলে বিয়ে বাড়িতে এসেও অংক কষতে হবে একথা প্রমাণ করার জন্য?
৭০. ঢিলটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় (পরের অনিষ্ট করলে নিজেরও অনিষ্ট হয়) কারো বিরুদ্ধে কুৎসারটানোর আগে ঢিলটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয় প্রবাদটি স্মরণে রেখ।
৭১. ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার (শূন্য হাতে বাহাদুরি) বল নাই ব্যাট নাই বাবু চললেন খেলতে, যেন ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দ্দার।
৭২. তিলকে তাল করা (সামান্য বিষয়কে বাড়িয়ে গুরুতর করা) দুইবন্ধুর মনোমালিন্য নিয়ে তিলকে তাল না বানিয়ে মিটমাট করে নাও, তাতেই মঙ্গল।
৭৩. তেলা মাথায় তেল দেওয়া (ধনীর খোশামোদ করা) তেলা মাথায় তেল দেওয়া মানুষেরই স্বভাব, চৌধুরী সাহেবের কথা বাদ দিয়ে আমার মত অভাজনের কথা তুমি কেন রাখবে?
৭৪. দশের লাঠি একের বোঝা (দশজনের পক্ষে যা করা সহজ একজনের পক্ষে তা করা অতি কঠিন) দশের লাঠি একের বোঝা এ কথা মনে রেখেই গণ শিক্ষা বিস্তার কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।
৭৫. দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ (ঐক্যবদ্ধ হওয়াই আসল কৃতিত্ব) ‘দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ’ এই মন্ত্রে জেগে ওঠ-এসো আরো একবার রুখে দাঁড়াই অশুভ চক্রের বিরুদ্ধে।
৭৬. দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পোষা (শত্রুকে যত্নে লালন পালন করা) যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করা আর দুধকলা দিয়ে কালসাপ পোষা সমান কথা।
৭৭. দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল (দুর্জন সঙ্গীর চেয়ে নিঃসঙ্গ থাকা অধিকতর বাঞ্ছনীয়) অনেক দিনইতো দেখা হলো এবার তোমরা বিদায় হও, আমার জন্য দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়ালই ভাল।
৭৮. দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো (ভালোর অভাব মন্দ দিয়ে পূরণ) অতিথি শিল্পীর অনুপস্থিতিতে স্থানীয়দের দিয়ে সঙ্গীত পরিবেশন করে আয়োজকেরা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটালেন।
৭৯. ধরি মাছ না ছুঁই পানি (দায়িত্ব পালন না করে সুখ ভোগ) বুড়ো বাবার কাঁধে চাপিয়ে আর কত দিন ধরি মাছ না ছুঁই পানি করে সংসার চালাবে, এবার নিজের কাঁধে বোঝা নাও।
৮০. ধর্মের কল বাতাসে নড়ে (সত্য আপনা আপনিই প্রকাশ পায়/ অন্যায়ের শাস্তি দৈবক্রমেই হয়) স্ত্রীকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে শেষ রক্ষা হলো না রহিমের, আসলে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।
৮১. ধরাকে সরা জ্ঞান করা (অহঙ্কারী হওয়া) এখন এমন পাশের ছড়াছড়ি আর তুমি কিনা আই এ পাশ করেই ধরাকে সরা জ্ঞান করতে শুরু করেছ?
৮২. নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা (নিজের অপারগতা অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা) মামা খালু না থাকলে শুধু যোগ্যতাই চাকরি হয় না একথা বল না, নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা সবাই বলে।
৮৩. নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল (একেবারে না থাকার চেয়ে কম থাকা ভাল) অভাবের সংসারে আর কিছু না থাক-মাথা গুজার ঠাঁইটুকুই তো নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল।
৮৪. নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো (নিশ্চিন্তে দিন কাটানো) প্রতিযোগিতার এ বাজারে নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো বাদ দিয়ে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোল।
৮৫. নুন আনতে পান্তা ফুরায় (প্রবল দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটানো) নুন আনতে পান্তা ফুরায়, আমাদের কী বড়লোকি চাল মানায়?
৮৬. পাকা ধানে মই দেওয়া (প্রায় সমাপ্ত কাজ নষ্ট করা) তোমার সম্মতি পেলেই বিয়েটা হয়ে যাবে, তুমি আবার পাকা ধানে মই দিও না।
৮৭. পচা শামুকে পা কাটা (তুচ্ছ কারণে বিপন্ন হওয়া) মৌলবাদিদের কথায় নাটক বন্ধ করব কেন? পচা শামুকে পা কাটলে কি কেউ হাঁটা বন্ধ করে?
৮৮. ফাঁদে পা দেওয়া (চক্রান্ত না বুঝে বিপদে পড়া) বিশ্বাস করে ফাঁদে পা দিয়েছ এখনতো প্রায়শ্চিত্ত করতেই হবে।
৮৯. বানরের গলায় মুক্তোর মালা (অযোগ্য লোককে মূল্যবান বস্তু দান) ওর মতো অসৎ ছেলের সঙ্গে বোনের বিয়ে দেয়া আর বানরের গলায় মুক্তোর মালা দেয়া সমান কথা।
৯০. বামন হয়ে চাঁদে হাত (সাধারণ ব্যক্তির অসাধারণ বস্তু লাভের আশা) টাকার খেলায় নির্বাচনে গরিবের প্রার্থী হতে চাওয়া বামন হয়ে চাঁদে হাত দিতে চাওয়া সমান কথা।
৯১. ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ (বাজে কাজে অর্থ ব্যয় করা) তার লেখা পড়ার জন্য টাকা খরচ করা আর ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ সমান কথা, তার চেয়ে ভাল এখন থেকেই কোন কাজে লাগিয়ে দাও।
৯২. ভিটেয় ঘুঘু চড়ানো (চরম সর্বনাশ করে দেওয়া) নির্বাচনে জয়ী হয়েই প্রতিশোধ নিতে বিরোধী পক্ষের ভিটেয় ঘুঘু চড়ানোর রেওয়াজ শুরু হয়েছে আমাদের দেশে।
৯৩. মায়ের কাছে মামার বাড়ির গল্প (কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ লোককে সে বিষয়ে নতুন করে জানানোর চেষ্টা) দলছুট পান্ডাদের কথা আমাকে আর নতুন করে বলতে হবে না, আমি সবই জানি, মায়ের কাছে মামার বাড়ির গল্প করে কী লাভ?
৯৪. মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া (কিংকর্তব্যবিমূঢ় হওয়া) বিদেশে যাওয়ার টাকা ফেরৎ না পেয়ে কুদ্দুসের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল।
৯৫. মেঘে মেঘে বেলা হওয়া (বয়স বেড়ে যাওয়া) মেঘে মেঘে বেলা বেড়ে গেছে এবার সংসারের দায়িত্বটি কাঁধে নাও।
৯৬. যত গর্জে তত বর্ষে না (শূন্য আস্ফালন) বাচাল মানুষকে কেউই সহজে বিশ্বাস করতে চায় না বরং ভাবে যত গর্জে তত বর্ষে না।
৯৭. যত দোষ নন্দ ঘোষ (দুর্বলের ওপর সবকিছুর দোষ চাপানো) অফিসে যাই হোক না কেন সবাইত পিয়নটাকেই সন্দেহ করে যেন যত দোষ নন্দঘোষ।
৯৮. যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা (ধৃষ্টতা) হাসিব সাহেব অফিসের পিয়নের যত বড় মুখ নয় তত বড় কথা শুনেরীতিমত বিস্মিত হলেন।
৯৯. যেমন বুনোরল তেমনি বাঘা তেঁতুল (বড় অপরাধীর কঠিন শাস্তিদাতা) যুদ্ধাপরাধীদের প্রতি কোন করুনা নয়, বরং যেমন বুনোরল তেমন বাঘা তেতুল হতে হবে।
১০০. যে সহে সে রহে (ধৈর্যধারণ করে থাকতে পারলে কখনও বিনাশ হয় না) অল্পতে অতিষ্ট হয়ো না, মনে রেখ যে সহে সে রহে।
১০১. যেমন কুকুর তেমন মুগুর (যার যেমন স্বভাব, তাকে সেভাবে শায়েস্তা করা) দুষ্টের দমন করতে যেমন কুকুর তেমন মুগুর না হলে চলে না।
১০২. রতনে রতন চেনে (এক মন্দ ব্যক্তি আরেক ব্যক্তির মন্দত্ব সহজেই বোঝে) আজহারই পারবে ফেরদৌসের কুকীর্তির তথ্য হাজির করতে কারণ রতনে রতন চেনে।
১০৩. লাভের গুড় পিঁপড়েয় খায় (সামান্য লাভ করতে গিয়ে অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া) বেশি লোভ করো না, শেষে লাভের গুড় পিঁপড়ে খাবে।
১০৪. শাক দিয়ে মাছ ঢাকা (ব্যর্থ চেষ্টা করা) অপরাধ করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করো না, তাতে বরং অমঙ্গলই হবে।
১০৫. শাপে বর হওয়া (যা মন্দ ভাবা হয়েছিল আসলে তা ভাল হওয়া) কুৎসা রটিয়ে বিরোধী পক্ষের কোন লাভ হলো না বরং সত্য জেনে এখন আফসার সাহেবকেই সবাই বাহবা দিচ্ছে-একেই বলে শাপে বর হওয়া।
১০৬. শিকারি বেড়াল গোঁফ দেখে চেনা যায় (হাবভাব দেখেই উদ্দেশ্য বোঝা যায়) অভিজ্ঞ মানুষ মানুষ চিনতে ভুল করে না কারণ শিকারি বেড়াল গোঁফ দেখে চেনা যায়।
১০৭. সাবধানের মার নাই (সতর্কতার বিপদ নাই) সাবধানের মার নাই-বাক্যটি প্রবাস জীবনে স্মরণ রেখ।
১০৮. সাতেও নাই পাঁচেও নাই (নিরপেক্ষ) সংসারে সাতেও নাই পাঁচেও নাই এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর।
১০৯. হক কথার মার নাই (সত্য কথা বললে লাভবান হওয়া যায়) আলোকিত মানুষ মাত্রই জানে, হক কথার মার নাই।
১১০. হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা (সুযোগ গ্রহণ না করা) হাতের লক্ষ্মী পায়ে না ঠেলে চাকরিটাই আপাতত যোগদান কর।