এক অন্যরকম উত্তরপত্র

Showing posts with label ইতিহাস - History. Show all posts
Showing posts with label ইতিহাস - History. Show all posts

Tuesday 14 February 2017

Khudiram Bose - ক্ষুদিরাম

একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি



একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি।
হাসি হাসি পরব ফাঁসি দেখবে ভারতবাসী।

কলের বোমা তৈরি করে
দাঁড়িয়ে ছিলেম রাস্তার ধারে মাগো,
বড়লাটকে মারতে গিয়ে
মারলাম আরেক ইংলন্ডবাসী।

হাতে যদি থাকতো ছোরা
তোর ক্ষুদি কি পড়তো ধরা মাগো
রক্ত-মাংসে এক করিতাম
দেখতো জগতবাসী

শনিবার বেলা দশটার পরে
জজকোর্টেতে লোক না ধরে মাগো
হল অভিরামের দ্বীপ চালান মা ক্ষুদিরামের ফাঁসি

বারো লক্ষ তেত্রিশ কোটি
রইলো মা তোর বেটা বেটি মাগো
তাদের নিয়ে ঘর করিস মা
ওদের করিস দাসী

দশ মাস দশদিন পরে
জন্ম নেব মাসির ঘরে মাগো
তখন যদি না চিনতে পারিস
দেখবি গলায় ফাঁসি।



প্রেক্ষাপট

ক্ষুদিরাম বসু ছিলেন প্রথম বাঙালি বিপ্লবী যাকে ব্রিটিশ সরকার ফাঁসি দিয়েছিল। ক্ষুদিরাম ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসন উৎখাত করার জন্য সশস্ত্র বিপ্লবে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯০৮ সালের ১১ অগস্ট তার ফাঁসির নির্দেশ কার্যকর হয়। ফাঁসির সময় তার বয়স ছিল ১৮। তার ফাঁসি উপলক্ষে তাকে বিদায় জানানোর জন্য এই গানটি রচিত হয়েছিল।


চিরবপ্লবী এক কিশোর -ক্ষুদিরাম বসু


ক্ষুদিরাম বসু (৩রা ডিসেম্বর ১৮৮৯ - ১১ আগস্ট ১৯০৮) ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের শুরুর দিকের সর্বকনিষ্ঠ এক বিপ্লবী। ফাঁসি মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ১৮ বছর, ৭ মাস ১১ দিন।

ক্ষুদিরাম বসু ডিসেম্বর ১৮৮৯ তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত মেদিনীপুর জেলা শহরে্র কাছাকাছি হাবিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ত্রৈলোক্য নাথ বসু ছিলেন নাদাজল প্রদেশের শহরে আয় এজেন্ট। তার মা লক্ষীপ্রিয় দেবী। তিন কন্যার পর তিনি তার মায়ের চতুর্থ সন্তান। দুই পুত্র আগেই মৃত্যুবরণ করেন। অপর পূত্রের মৃত্যুর আশংকায় তিনি তখনকার সমাজের নিয়ম অনুযায়ী তার পুত্রকে তার বড় বোনের কাছে তিন মুঠি খুদের (শস্যের খুদ) বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। খুদের বিনিময়ে ক্রয়কৃত শিশুটির নাম পরবর্তীতে ক্ষুদিরাম রাখা হয়। ক্ষুদিরাম বসু পরবর্তিতে তার বড় বোনের কাছেই বড় হন। 

ক্ষুদিরাম বসু তার প্রাপ্তবয়সে পৌঁছানোর অনেক আগেই একজন ডানপিটে, বাউণ্ন্ডুলে, রোমাঞ্চপ্রিয় হিসেবে পরিচিত লাভ করেন। ১৯০২-০৩ খ্রিস্টাব্দকালে যখন বিপ্লবী নেতা শ্রী অরবিন্দ এবং সিস্টার-নিবেদিতা মেদিনীপুর ভ্রমণ করে জনসম্মুখে বক্তব্য রাখেন এবং বিপ্লবী দলগুলোর সাথে গোপন পরিকল্পনা করেন, তখন তরুণ ছাত্র ক্ষুদিরাম বিপ্লবে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত হন। ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে ক্ষুদিরাম তার বোন অপরূপার স্বামী অমৃতর সাথে তামলুক শহর থেকে মেদিনীপুরে চলে আসেন। সেখানে তিনি মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন। এখানেই তার বিপ্লবী জীবনের অভিষেক। তিনি বিপ্লবীদের একটি নবগঠিত আখড়ায় যোগ দেন। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই ক্ষুদিরাম তার গুণাবলীর জন্য সবার চোখে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেন।

ক্ষুদিরাম বসু তার শিক্ষক সত্যেন্দ্রনাথ বোস এর নিকট হতে এবং শ্রীমদ্ভগবদগীতা পড়ে ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে বিপ্লব করতে অনুপ্রাণিত হন। তিনি বিপ্লবী রাজনৈতিক দল "যুগান্তর" এ যোগ দেন।

১৬ বছর বয়সে ক্ষুদিরাম পুলিশ স্টেশনের কাছে বোমা পুঁতে রাখেন এবং ইংরেজ কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করেন। একের পর এক বোমা হামলার দায়ে ৩ বছর পর তাকে আটক করা হয়। যে বোমা হামলার জন্য তাকে মৃত্যদণ্ড দেয়া হয় তাতে ৩ জন ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছিল।

আজকে সময়ের পরিক্রমায় আরেক ১১ ই আগস্ট । আগস্ট যে বাঙ্গালিকে আর কত কাঁদাবে কে জানে।আসুন ই বীর এর কথা মনে করে হলেও আমরা শপথ নেই , নিজেদের মধ্যে সব ভেদাভেদ ভুলে যাওয়ার । শপথ নেই জামাত - শিবির -হেফাজত -সব রকম ধর্ম ব্যবসায়ী , যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান থেকে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলার ।

জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু । জয় প্রজন্ম , জয় তারুন্য , জয় শাহবাগ । জয় হোক মুক্তিযুদ্ধের , জয় হোক স্বাধীনতার ।



সংগঠকের ভূমিকায় জেলা পরিক্রমণরত ক্ষুদিরাম।




ধরা পড়ার পর ক্ষুদিরাম।